রংপুর থেকে : জেলার সদর উপজেলার একটি পুকুরের নাম ‘সদ্যপুষ্করিণী’।
রংপুর মহানগরী থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে দক্ষিণ-পশ্চিম কোনে ৯ নম্বর সদ্যপুষ্করিণী ইউনিয়ন। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণ কোনে সদ্যপুষ্করিণী।
কথিত আছে তড়িঘড়ি করে এক রাতে খোড়া হয়েছে বলে এর নামকরণ করা হয়েছে ‘সদ্যপুষ্করিণী’।
বিশাল পুকুরের স্বচ্ছ জল এবং গাছগাছালি ঘেরা পুকুরপাড়ের শীতল বাতাস সহজেই শরীর জুড়িয়ে দেয়। এই পুকুরের নামে ইউনিয়ন পরিষদেরও নামকরণ করা হয়েছে সদ্যপুষ্করিণী ইউনিয়ন।
রংপুরের বাসিন্দা যারা পেশাগত কারণে বাইরে থাকেন, ঈদের ছুটিতে বাড়িতে এসে তারা সহজেই ঘুরে আসতে পারেন ইতিহাসের সাক্ষী সদ্যপুষ্করিণী থেকে। এছাড়া রংপুরে বাইরে থেকেও আসতে পারেন এ পুষ্করিণীর পাড়ে। কাছেই দেখতে পাবেন চৌদ্দ ভবন এবং বড়ভিটার বিশালাকৃতির বটগাছ। যা সহজেই আপন করে নেবে আপনাকে।
এছাড়াও সদ্যপুষ্করিণীর পাশেই রয়েছে বেহুলা-লক্ষ্ণিনদরের কাহিনীর উপজীব্য ‘চৌদ্দ ভুবন’ ও ‘জীবন-মরণ ঘাট’।
রংপুর জেলা প্রশাসন (ডিসি) অফিস থেকে প্রাপ্ত তথ্য থেকে জানা যায়, প্রায় ৬শ’ বছর পূর্বে এখতিয়ার উদ্দীন মোহাম্মদ বিন বখতিয়ার খিলজী’র শাসনামলে সৈন্য বাহিনী এই এলাকার মধ্যে দিয়ে যাওয়ার সময় তাদের পানির সমস্যা দেখা দেয়।
এ সময় কয়েক লক্ষাধিক সেনাসদস্য এখানে তাবু খাটিয়ে অবস্থান গ্রহণ করেন। পরে তারা পানির সমস্যা সমাধানের জন্য এখানে একটি পুকুর খনন করেন। তখন থেকে ওই পুকুরের নাম সদ্যপুস্করিণী হিসাবে প্রসিদ্ধ।
পর্ব পুরুষদের বর্ণনা মতে- বিপুল সংখ্যক সৈন্যের পানির প্রয়োজন পড়লে পানি সরবরাহ কঠিন হয়ে পড়ে। তাৎক্ষণিকভাবে সেনাপতি সিদ্ধান্ত নেন একটি পুকুর খননের। যেই কথা- সেই কাজ। সৈন্যরা লেগে পড়েন পুকুর খননে। আর এভাবেই এই বিশাল পুকুরের সৃষ্টি।
রংপুর বাস টার্মিনাল বা রেল স্টেশন থেকে রিক্সা, ভ্যান, অটোরিক্সায় করে পাকা সড়ক ধরে দর্শনা-ফতেপুর ঘাঘট নদী পেরিয়ে পালিচড়া হাটে ইউনিয়ন পরিষদ। এরপর মাত্র ২ কিলোমিটার দূরে কুন্ডি উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের পূর্ব পাশ দিয়ে সদ্যপুষ্করিণী।
এই পুকুরটি কখনও শুকিরে যায় না। ইজারার মাধ্যমে প্রতি বছর এখানে মাছ ছাড়া হয়। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে টিকিটের মাধ্যমে বড়শি দিয়ে মাছ শিকার করে উৎসাহীরা।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস