বড়ভিটার ঐতিহ্যবাহী বিশাল বটগাছটিও শীতল পরশ বুলিয়ে দেবে সহজেই। গাছের সঙ্গে মাটির কেমন সম্পর্ক তা এখানে না এলে বোঝা যাবে না। এখানকার বিশাল বট গাছের অসংখ্য লতা মাটির সঙ্গে লেগে এক অপূর্ব দৃশ্যের অবতারণা করেছে। বটগাছটির নিচে ঈদের নামাজ পড়েন স্থানীয়রা।
চৌদ্দ ভবন ও জীবন-মরণ ঘাট
দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে আরেকটি হল ‘চৌদ্দ ভুবন’। আনুমানিক ৩শ’ বছর পুর্বে কালপরিক্রমায় বেহুলা সুন্দরীকে সঙ্গে নিয়ে তার স্বামী বালা লক্ষিন্দার নৌকা ভ্রমণে এসে এই এলাকার সৌন্দর্য দেখে বিমহিত হন।
কথিত আছে, সেখানে কিছুদিন অবস্থান করার পর ১৪টি দ্বীপের সৃষ্টি হয়। ১৪টি দ্বীপের মধ্যে ১টি মরণ দ্বীপ এবং একটি জীবিত দ্বীপ ছিল। এক দ্বীপ দিয়ে জীবিত মাছ গেলে মরে যেত। অপর একটি দ্বীপের পাশ দিয়ে গেলে মরা মাছ জীবিত হয়ে যেত।
এছাড়াও এখানে রয়েছে একটি বিশালাকায় বটগাছ। শত ঝড়েও ডাল-পাতা ঝড়ে পড়তো না। লক্ষিন্দার দম্পত্তি সেখানে একটি ভবন নির্মান করেন। তদানুযায়ী ওই স্থান ‘চৌদ্দ ভবন’ নামে খ্যাত।
ঈদের আগের দিন ‘চৌদ্দ ভবনে’ গিয়ে দেখা যায়- ভবনের কোনো চিহ্ন না থাকলেও টিলার উপর দাঁড়িয়ে আছে ইতিহাসের সেই বট গাছটি। গাছটির বেশ কয়েকটি লতা ঝুলে মাটি ছুঁয়েছে। গাছের ছায়ায় নির্মল বাতাসে শিকড়গুলো স্পর্শ করে গা এলিয়ে বসে আছেন কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা।
এদের একজন মির্জাপুর বাতাসন গ্রামের আব্দুল ওহাব (৯০) পূর্ব পুরুষদের উদ্ধৃতি দিয়ে জানান, ‘লক্ষিন্দারকে বাসর ঘরে যখন সাপ কামড় দেয় তখন বেহুলা তাকে ভেলায় ভাসতে ভাসতে এখানে চলে আসেন।’
‘বেহুলা দেখতে পায় এক নারী ছেলেকে নিয়ে কাপড় কাচতে এসেছেন। কিন্তু ছেলে কান্নাকাটি করায় তাকে মরণ দ্বীপে শুয়ে রেখে কাপড় কাচে। কাপড় কাচা শেষে জীবিত দ্বীপে নিয়ে গেলে সে আবার জীবন ফিরে পায়। তখন বেহুলা লক্ষিন্দারকে সেই দ্বীপে নিয়ে গেলে জীবিত হয়ে ওঠে।’
সেই বট গাছটি এখনও রূপকথার সাক্ষী দিচ্ছে। গাছের নিচে ছেলে-বুড়ো সকলেই জানালেন, “শত ঝড়েও এর ডাল ভেঙ্গে পড়ে না।” তবে গাছের নিচে পাতা পড়ে থাকতে দেখা গেছে।
আব্দুল ওহাব বলেন, “হামরা ছোটতে য্যামন দেখছি এলাও গাছটা ত্যামন আছে।”
আব্দুল ওহাব আরও বলেন, রাজা-বাদশারা এখানে ‘বাহান্নো বাজার তেপান্ন গলি’র বাজার বানাইছিল। যার শেষ চিহ্নটুকু নিজেও দেখছেন বলে দাবি করেন আব্দুল ওহাব।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস